আমার ১৫ বছর বয়সী মেয়ের আচরণে সম্প্রতি বেশ পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। সে আগে আমার সাথে অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল কিন্তু এখন আমার সাথে সবকিছু আলোচনা করে না। আমি নিশ্চিত হতে চাই যে সে কোনপ্রকার ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িয়ে পড়ছে না। তার গোপনীয়তা বজায় রেখে কীভাবে তার ওপর নজর রাখা যায়?
বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এ সময়ে অনেক মা-বাবা তাদের বাড়তি নজরদারিতে রাখার প্রয়োজন অনুভব করেন। ১৪-১৮ বছর বয়সীরা খুবই স্বাধীনচেতা মনোভাবের অধিকারী হয়, তারা নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে চায়। বন্ধু ও সমবয়সীদের মধ্যে তারা নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে আগ্রহী হয় এবং তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করে। কিন্তু এ সময়ে তাদের মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ বিকশিত হয় না। ফলে তারা নিজেদের সিদ্ধান্তের ঝুঁকিগুলো ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেনা।
তাদেরকে চোখে চোখে রাখা হলে তারা মা-বাবার সঙ্গে আলোচনা করতে ভয় পায় কিংবা দ্বিধা বোধ করে। অনেক সময় তারা মা-বাবার এ আচরণকে অতিরিক্ত খবরদারি মনে করে এবং তাদের পরামর্শকে অগ্রাহ্য করে।
কেউ কেউ মা-বাবার বিরুদ্ধে একরকম বিদ্রোহই করে বসে এবং তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে চায়না। কিন্তু তত্ত্বাবধানের ব্যাপারটি সন্তানের জন্য সম্মানজনক হলে বরং তারা মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে, তাদের পরামর্শকে গুরুত্ব দেয় এবং ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখে। মা-বাবার উচিত বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানদের সঙ্গে উষ্ণ, স্থিতিশীল, ভালাবাসা এবং মায়া-মমতাপূর্ণ বন্ধন গড়ে তোলা।
আপনার মেয়ের জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে তাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়ার জন্য প্রয়োজন তাকে উপলব্ধি করা এবং তার সঙ্গে কার্যকরভাবে যোগাযোগ স্থাপন। মেয়ের সঙ্গে তার জীবন, স্বপ্ন এবং পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা বলুন। আপনারা দুজনই উপভোগ করেন এমন কিছু খুঁজে বের করুন এবং একসঙ্গে তা করুন। তার বন্ধুদের সম্পর্কে এবং অবসর সময়ে সে কী করে তা জানবার চেষ্টা করুন। এভাবে আপনি তার সম্মান বজায় রেখেই তার সম্পর্কে খোঁজ নিতে পারবেন। তাহলে সে আদৌ কোন ঝুঁকিতে আছে কিনা তা বোঝা এবং তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া সম্ভব হবে।
সোম, ১৪ সেপ্ট ২০২০, রাত ৩:৫৬ সময়
Login & Write Comments