শিশুরা বেড়ে উঠুক সুরক্ষিত পরিবারে, প্রতিষ্ঠানে নয় - প্রথম আলো
“প্রতিষ্ঠানে থাকার ফলে শিশুদের শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও আবেগীয় বিকাশে দারুণ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। প্রতিষ্ঠানে বাস করা শিশুরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী, কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবক ও পরিদর্শনকারীদের দ্বারা নির্যাতন, শোষণ ও অবহেলার শিকার হয়। কেউ কেউ পাচারের ঝুঁকিতে থাকে।বিভিন্ন দেশেই শিশু পরিচর্যা বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় যে কেউ প্রতিষ্ঠান খুলতে পারে। ফলে তা হয়ে ওঠে নিছক ব্যবসা। কিন্তু যেসব প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য সৎ এবং ব্যবস্থাপনা ভালো, সেগুলোও শিশুদের বিকাশের জন্য সহায়ক নয়।
পরিবারেও শিশু নির্যাতন ও অবহেলার শিকার হতে পারে। পরিবার যদি শিশুকে সুরক্ষা দিতে অক্ষম বা অনিচ্ছুক হয়, তাহলে রাষ্ট্রকে বিকল্প পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন নিকটাত্মীয়-পরিজন বা আগ্রহী পালক পরিবারের কাছে রাখা ইত্যাদি। যদি এগুলোর কোনোটিই শিশুর জন্য উপযুক্ত না হয়, কেবল তখনই প্রতিষ্ঠানের কথা বিবেচনা করতে হবে। সেখানে সেবার মান বজায় রাখা জরুরি। প্রতিষ্ঠানে থাকতে হলে তা হবে শিশুর নির্দিষ্ট চাহিদা মেটাতে অন্তর্বর্তীকালের জন্য। শিশুকে পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তা সম্ভব না হলে পরিবারভিত্তিক বিকল্প পরিচর্যা খোঁজা দরকার। যেকোনো রকম ব্যবস্থায় শিশুদের রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিদ্যমান বিকল্পগুলো যাচাই এবং সেগুলোর সুবিধা-অসুবিধা বিশ্লেষণ করতে হবে। পুরো প্রক্রিয়ায় শিশুর মতামত শোনা এবং ‘শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ’কে আমলে নেওয়া প্রয়োজন।
এতিমখানা বা অন্য প্রতিষ্ঠানে সহায়তা করার আগে সবাইকে ভাবতে হবে যে শিশুকে পারিবারিক পরিবেশে রাখা যেত কি না। এ দান শিশুর কল্যাণে কাজে লাগছে, নাকি তার জন্য ক্ষতিকর? সরকার, দাতা সংস্থা, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত ও সমাজকে পরিবারে বিনিয়োগের মাধ্যমে শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ঠেকাতে হবে। প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক ব্যবস্থার আমূল সংস্কার প্রয়োজন।“
প্রথম আলো-তে প্রকাশিত লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন...
সোম, ২৬ জুল ২০২১, রাত ৩:৪৯ সময়
Login & Write Comments