শিশুরা কোন দুর্ঘটনার খবর টেলিভিশনে দেখলে ও তা নিয়ে প্রশ্ন করলে কিভাবে তাদের বোঝাতে হবে?

আমার ৭ বছর বয়সী একটি মেয়ে এবং ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। যখন অগ্নিকান্ড, সন্ত্রাসী আক্রমণসহ বিভিন্ন ধরণের দুর্ঘটনার খবর টেলিভিশিনে দেখায় তখন তারা অনেক প্রশ্ন করে। কিভাবে তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি যাতে তারা অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন না হয় কিন্তু কি ঘটেছে তা বুঝতে পারে?

খবর পরিবেশিত হয় বড়দের কথা চিন্তা করে, শিশুদের জন্য নয়। ভয়াবহ কোন ঘটনায় মা-বাবাসহ সংশ্লিষ্ট বড়দের দায়িত্ব হল, শিশুদের কাছে তাদের উপযোগী করে কি ঘটেছে তা ব্যাখ্যা করা। যে কোন দুর্ঘটনা বা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে শিশুদের সঙ্গে কথা বলার সময় নীচের বিষয়গুলি মনে রাখা যেতে পারেঃ

    শিশুদের কাছ থেকে যে কোন প্রশ্নের জন্য তৈরী থাকা। তারা হয়তো জানতে চাইতে পারে যে কারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, এর কারণ কী, আর ফলাফল কী হবে।
    সততার সঙ্গে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে হবে, কিন্তু তা যেন শিশুর বয়স উপযোগী হয়। উত্তর হবে নির্দিষ্ট প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে। শিশুকে রক্ষা করার জন্য মিথ্যা বলা যাবে না, তবে সবসময় সবকিছু বলার ও প্রয়োজন নেই।
    পত্রিকায় প্রকাশিত বা টেলিভিশনে দেখানো ভয়াবহ ছবি থেকে শিশুদের দূরে রাখা দরকার, কারণ এসব স্মৃতি তাদের ক্ষতি করতে পারে।
    যারা সরাসরি আক্রান্ত হয়েছে তাদের যত কাছাকাছি শিশুরা থাকবে ততই তাদের এ বিষয়ে কথা বলার প্রয়োজন হবে। শিশুদের এটাও বুঝতে দেয়া প্রয়োজন যে, তারা ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কাউকে প্রত্যক্ষভাবে না জানলে তাদের উপর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে না।
    শিশুদের আবেগীয় প্রতিক্রিয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তারা ভয়, উদ্বেগ, রাগ অথবা দুঃখ বোধ করতে পারে। তাদের অনুভূতি নিয়ে বেশী প্রশ্ন করা উচিত না। তবে তারা কথা বলতে চাইলে সে সুযোগ করে দিতে হবে। তাকে আস্থাপূর্ণ একটা পরিবেশ দেয়া প্রয়োজন। যদি মনে হয় শিশুটি ভয় পাচ্ছে বা উদ্বিগ্ন হচ্ছে তাহলে তাকে সেটা বলা যেতে পারে। তাদেরকে সাধারণভাবে এটাও বলা যায় যে, এই ধরণের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক।
    কোন কোন শিশু অন্যদের তুলনায় বেশী আক্রান্ত হয়। তারা কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। উপসর্গগুলি হল-অমনোযোগিতা, ঘুমের অসুবিধা, আচরণগত পরিবর্তন,দুঃস্বপ্ন, একা ঘুমাতে ভয় পাওয়া,নিজ বয়সের তুলনায় ছোট শিশুদের মত আচরণ ইত্যাদি। এই ধরণের পরিস্থিতিতে শিশুদের আশ্বস্ত করা দরকার যে, তারা চাইলে কারো সাথে এ নিয়ে কথা বলতে পারবে। কোন কোন ক্ষেত্রে মনঃচিকিৎসকের সহায়তা প্রয়োজন হয় যাতে শিশুটি ঘটনাকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে পারে, এবং দীর্ঘমেয়াদী মনঃস্তাত্বিক সমস্যায় না ভোগে।


রবি, ১৮ অক্টো ২০২০, রাত ৩:৩৯ সময়

মতামত/ পরামর্শ/ প্রশ্ন


“শিশুরাই সব” এর এ পর্যায়ে আমরা আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ আশা করছি।
ওয়েবসাইটে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কি ধরণের বিষয় দেখতে চান তা জানান। লেখা পড়ে, ভিডিও দেখে শেয়ার বা মন্তব্য করুন। সন্তান পালন বা শিশুসংক্রান্ত বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে জানান। আমরা উত্তর দেব।
ওয়েবসাইটে শিশুদের জন্য আপনার ভাবনাগুলো লিখে পাঠান (সর্বোচ্চ ৫০০ শব্দ)। এছাড়া নিজের বা আপনার সংস্থার ভিডিও, রিপোর্ট, অনুষ্ঠানের তথ্য ইত্যাদি শেয়ার করুন। উপযুক্ত হলে আমরা প্রকাশ করব।

যোগাযোগ