কোভিড-১৯ স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষায় ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। অনেক দিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিশুরা তাদের শৈশব হারিয়েছে। পরিচিত জীবন ও বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের মানসিক চাপ বাড়ছে। কঠিন পরিস্থিতিতে অনেক শিশুই দ্রুত মানিয়ে নেয়। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে রাগ, উদ্বেগ, দুঃখ ও ভয় বাড়তে থাকে।
বর্তমান মহামারি এবং বিভিন্ন দুর্যোগে এ বিষয়গুলো মনে রাখা প্রয়োজন:
-মা-বাবা শিশুদের করোনাভাইরাসের লক্ষণ, কীভাবে এই ভাইরাস ছড়ায়, কীভাবে নিজেকে এবং অন্যদের রক্ষা করা যাবে—সে–সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারেন। পাশাপাশি তাকে এটাও জানাতে হবে যে পুরো বিশ্ব কীভাবে এই মহামারি মোকাবিলায় কাজ করছে। শিশুদের কাছ থেকে যেকোনো প্রশ্নের জন্য তৈরি থাকা প্রয়োজন। সততার সঙ্গে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে হবে, কিন্তু তা যেন শিশুর বয়স উপযোগী হয়। শিশুকে মিথ্যা বলা যাবে না, তবে সব সময় সবকিছু বলারও প্রয়োজন নেই। কোনো সন্ত্রাসী হামলায় যদি কিছু মানুষ নিহত হয়, তাহলে তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া শিশুদের জন্য ক্ষতিকর।
-শিশুদের প্রতিক্রিয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে অনুভূতি নিয়ে বেশি প্রশ্ন করা উচিত নয়। তাকে আস্থাপূর্ণ একটা পরিবেশ দেওয়া প্রয়োজন, যাতে সে বুঝতে পারে যে বলতে চাইলে তার কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনা হবে।
-শিশুরা বড়দের দেখেই শেখে। শিশুর সামনে মা-বাবার অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা প্রকাশ করা উচিত নয়। তাদের সামনে মহামারির খবর বারবার দেখা এবং এ নিয়ে আলোচনা করার দরকার নেই। কারণ, এতে তাদের অহেতুক উদ্বেগ বাড়বে। খবর পরিমিত পরিমাণে এবং বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়ার গুরুত্ব শিশুদের শেখানোর একটা সুযোগ এসেছে এই মহামারির সময়।
-কোনো কোনো শিশু সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। কিছু উপসর্গ দেখা যায়, যার মাঝে আছে অমনোযোগিতা, ঘুমের অসুবিধা, আচরণগত পরিবর্তন, দুঃস্বপ্ন, একা ঘুমাতে ভয় পাওয়া, নিজ বয়সের তুলনায় ছোট শিশুদের মতো আচরণ ইত্যাদি। যদি এই সমস্যা শিশুর প্রতিদিনের জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মঙ্গল, ২২ জুন ২০২১, রাত ৮:৫ সময়
Login & Write Comments