মা করোনা সংক্রমিত হলে সন্তানের যত্ন

মা করোনা সংক্রমিত হলে সন্তানের যত্ন

ছোট শিশুর মা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে তাঁর সন্তানের যত্ন নিয়ে একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে অনেকগুলো ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

শিশুকে আলাদা রাখা

-মা করোনা সংক্রমিত হলে শিশুকে বাবার কাছে রাখা ভালো। যদি বাবা-মা দুজনই সংক্রমিত হন, তাহলে অন্য কেউ শিশুর যত্ন নিতে পারেন। তবে শিশুদের কিছুতেই প্রবীণ কিংবা ঝুঁকিতে আছেন এমন ব্যক্তিদের কাছে রাখা যাবে না। এতে বয়স্করাও সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়বেন। 

-মনে রাখতে হবে, করোনার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার ৩ থেকে ১৪ দিন আগেই এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। সুতরাং মা-বাবা সংক্রমিত হলে তাঁদের উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই সন্তানও ভাইরাসের সংস্পর্শে চলে আসে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুরা করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে এলেও কিংবা সংক্রমিত হলেও তাদের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায় না। সবচেয়ে বড় কথা, শিশুদের তেমন বড় ক্ষতি না হলেও বা কোনো লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও তারা বড়দের মতোই ভাইরাস ছড়ায়।

-কাজেই এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বয়স্কদের কাছে সন্তানকে না রেখে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী সুস্থ কোন আত্মীয়কে দেখাশোনার দায়িত্ব দিতে পারেন। সেটা সম্ভব না হলে শিশুকে নিজের কাছেই রাখুন। এ ক্ষেত্রে ঘরে একটু দূরত্বে দোলনা বা আলাদা খাটে রাখা যেতে পারে। আর মা-বাবা অবশ্যই সব সময় মাস্ক পরবেন। তবে সন্তান একটু বড় হলে তাকে আলাদা ঘরে রাখা যায়। তার খাবার ও দরকারি জিনিস ঘরে পাঠিয়ে দিন।

সন্তানকে বুকের দুধ দিন

-করোনা সংক্রমিত মায়ের সন্তানকে বুকের দুধ দিতে মানা নেই। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বুকের দুধের জুড়ি নেই। তবে বুকের দুধ দেওয়ার আগে মা অবশ্যই ভালোভাবে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন। ভালো মানের মাস্ক পরে নাক-মুখ ঢাকবেন। 

-বুকের দুধ খাওয়া শেষ হয়ে গেলে সন্তানকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এরপর শিশুর শরীর, বিশেষ করে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে দিতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে

-বাসার সবাই মাস্ক পরুন। সন্তানকে হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, বারবার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা শিখিয়ে দিন। 

-এ সময় সন্তানের পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে। সুষম খাবারের পাশাপাশি জিংক, ভিটামিন সি এবং প্রোটিন বেশি করে খাওয়ান। মাছ, মাংস, ডিমে থাকে প্রোটিন। শিমজাতীয় খাবার, লাল মাংসে প্রচুর জিংক থাকে। টকজাতীয় খাবারে থাকে ভিটামিন সি। 

-যদি সম্ভব হয় সন্তানকে প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য রোদে নিন। এতে তাঁর শরীরে ভিটামিন-ডির চাহিদা পূরণ হবে।

পর্যবেক্ষণে রাখুন

সন্তানের যদি সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া বা করোনার অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে কিছুতেই দেরি করবেন না।

লিখেছেনঃ ডা. আবু সাঈদ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
সৌজন্যেঃ প্রথম আলো

কোভিড-১৯ ছবিটি এঁকেছেন শাহানাজ বেগম শাহীন


সোম, ৯ আগ ২০২১, রাত ৯:৩৮ সময়

মতামত/ পরামর্শ/ প্রশ্ন


“শিশুরাই সব” এর এ পর্যায়ে আমরা আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ আশা করছি।
ওয়েবসাইটে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কি ধরণের বিষয় দেখতে চান তা জানান। লেখা পড়ে, ভিডিও দেখে শেয়ার বা মন্তব্য করুন। সন্তান পালন বা শিশুসংক্রান্ত বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে জানান। আমরা উত্তর দেব।
ওয়েবসাইটে শিশুদের জন্য আপনার ভাবনাগুলো লিখে পাঠান (সর্বোচ্চ ৫০০ শব্দ)। এছাড়া নিজের বা আপনার সংস্থার ভিডিও, রিপোর্ট, অনুষ্ঠানের তথ্য ইত্যাদি শেয়ার করুন। উপযুক্ত হলে আমরা প্রকাশ করব।

যোগাযোগ